১৭ আষাঢ় ১৪৩১
 

সর্বশেষ

পাবনায় এসএল-৮ এইচ জাতের সুপার হাইব্রিড ধানের বীজ উৎপাদনে সাফল্য

Oct 13, 2013, 7:10:33 AM

পাবনায় এসএল-৮ এইচ জাতের সুপার হাইব্রিড ধানের বীজ উৎপাদনে সাফল্য

কাজী বাবলা,পাবনা: পাবনায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএডিসি’র চুক্তিবদ্ধ চাষীরা ফসলের মাঠে এসএল-৮ এইচ জাতের সুপার হাই ব্রিড  ধানের (ঋ-১) বীজ উৎপাদনে একর প্রতি ৬ শ কেজি অতিরিক্ত বীজ উৎপাদন করে সারাদেশের মধ্যে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। চীন থেকে আমদানি করা উচ্চ ফলনশীল এই বীজ বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে আরও দ্বিগুণ ফলনশীল করা সম্ভব হয়েছে। এই জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদ করে দেশের ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা পুরণ করে উদ্বৃত্ত ধান-চাল বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মূদ্রা আয় করা সম্ভব বলে কৃষি বিষেশজ্ঞরা দাবী করেছেন। সংশ্লিষ্ট  সূত্রের তথ্যে জানা গেছে, বিএডিসি ২০১১-১৩ অর্থবছরে বোরো উৎপাদন বর্ষে  সারদেশে ১ হাজার ৭শ ৩২ দশমিক ৫ একর (৬১৩ হেক্টর) জমিতে ১ হাজার ৩শ ৮৬ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদন কর্মসূচী গ্রহণ করে। এই কর্মসূচীর আওতায় পাবনার টেবুনিয়া কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স জোনে ৫০ একর জমিতে চুক্তিবদ্ধ চাষীদের মাধ্যমে এস এল-৮ এইচ জাতের সুপার হাইব্রিড ধানের (ঋ-১) বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৪ হাজার মেট্রিক টন। সূত্র জানায়, টেবুনিয়া কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স জোনের চুক্তিবদ্ধ চাষীদের মাধ্যমে ৫টি স্কিমে এস এল-৮ এইচ জাতের সুপার হাইব্রিড ধানের বীজ উৎপাদনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা একর প্রতি ৮শ কেজি থাকলেও এবার একর প্রতি ১ হাজার থেকে দেড় হাজার কেজি বীজ উৎপাদন হয়েছে। বিএডিসি কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনা ও প্রযুক্তিগত পরামর্শ এবং চাষীদের যথাযথ পরিচর্যায়ার কারনেই এটা সম্ভব হয়েছে। জানা গেছে, টেবুনিয়ার পশ্চিম বনগ্রাম ব¬কের ১৩ একর জমিতে গড়ে একর প্রতি ১ হাজার ৭২ কেজি  হাইব্রিড বীজ উৎপাদন হয়েছে। এছাড়াও মির্জাপুর দিকশাইল স্কীমে কৃষক আব্দুল খালেক একর প্রতি ১ হাজার ৩শ ৯০ কেজি, মোসলেম মাস্টারের জমিতে একর প্রতি গড়ে ১ হাজার ৮শ ১ কেজি বীজ উৎপাদন হয়েছে। সম্প্রতি টেবুনিয়া জোনের চুক্তিবদ্ধ এসব চাষীদের আবাদ পদ্ধতি দেখতে মাঠ পরিদর্শন করেন চীনের হাইব্রিড ধান বিশেষজ্ঞ জিয়াং সু-গুহ্ এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাগণ। তারা  মাঠ পরিদর্শন করে সাফল্যের জন্য কৃষক ও বিএডিসি কর্মকর্তাদের প্রশংসা করেন। টেবুনিয়া কন্ট্রাক্ট জোনের উপ-পরিচালক কৃষি বিজ্ঞানী আনন্দ চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৫ থেকে ৬ শ কেজি অতিরিক্ত বীজ উৎপাদন হয়েছে। তিনি বলেন, হাইব্রিড বা শঙ্কর ধান বীজ (ঋ-১) উৎপাদনের ক্ষেত্রে কৃষকেরা এবার রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। স্বাভাবিক নিয়মে হাইব্রিড ধানের একর প্রতি গড় ফলন প্রচলিত উচ্চ ফলনশীল জাতগুলোর চাইতে শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ বেশি হওয়ার কথা, কিন্তু এসএল-৮এইচ জাতের হাইব্রিড ধানের গড় ফলন প্রচলিত উচ্চ ফলনশীল জাত গুলোর প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের প্রায় সব রকম হাইব্রিড জাতের ধানের মধ্যে চীন থেকে আমদানিকৃত এস এল-৮ এইচ জাতের ধানের ফলন বেশী। এছাড়া এই ধানের আকার বড় ও লম্বা বিধায় চালের মান উন্নত। সরু চালের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ধানের চালের ব্যাপক চাহিদা। বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন এই জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদ করে আমাদের ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা পুরণ করে উদ্বৃত্ত ধান-চাল বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মূদ্রা আয় করা সম্ভব।

 
 
 
পাবনা নিউজ২৪.কম
থানাপাড়া (হেলেন কটেজ), পাবনা-৬৬০০
ই-মেইলঃ newsroom@pabnanews24.com