Nov 23, 2013, 4:02:43 AM
শামীম হাসান মিলন, চাটমোহর : পাবনার চাটমোহরের বিস্তীর্ন মাঠ জুড়ে কৃষকের বোনা ও রোপা আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। আমনের বাম্পার ফলনের কারণে কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে সোনলী হাসির ঝিলিক গেছে। ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে নবান্ন উৎসবের।
চাটমোহর উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ ঘুরে দেখা গেছে কৃষাণ-কৃষাণীরা কাস্তে নিয়ে মাঠে ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কাঠেঙ্গা গ্রামের কৃষক সেকেন্দার আলী, আব্দুল সাত্তার জানান, ইরি-বোরো ধানের মতো আমন ধান আবাদে পরিশ্রম কম করতে হয়। মাঠে ধান ছিটানোর পর প্রয়োজনীয় সার দিলেই আর কোন পরিশ্রমের প্রয়োজন হয়না। কোন কোন জমিতে সারেরও প্রয়োজন পড়েনা।
তারা আরো জানান, জানান, তার ৪ বিঘা জমিতে বৃ-৩৩, বৃ-৫১ এবং স্বর্ণা ধান আবাদ করে ১৮ থেকে মণ হারে ফলন হয়েছে।
ছাইকোলার পশ্চিম পাড়া গ্রামের কৃষক আজমত আলী বলেন, এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। আমি বৃ-৩৯, বিনা-৭ ধান আবাদ করে বিঘাপ্রতি ১৮ মণ হারে ধান পেয়েছি। তবে তিনি বলেন, ইরি আবাদে গত বছর শীত ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে বীজতলা এবং জমির ধান নষ্ট হবার কারণে আমন আবাদ আমাকে লাভের মুখ দেখিয়েছে।
হরিপুরের কৃষক জমির উদ্দিন ও রফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের এই মাঠে পানির দেখা পাওয়া যায়না। কারণ হিসেবে তিনি বড়াল নদীর উপর বাঁধের কারণ উল্লেখ করেন। এছাড়া আমাদের হরিপুর, ধরইল, আগসোয়াইল, পাছশোয়াইল মাঠে প্রচুর পরিমাণে আমন ধানের আবাদ হয়। আজলদীঘা, বাঁশীরাজ, কালাবকরিসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় ধানের আবাদ হতো ইরি-রোরো ধান আসার আগে। এখন অনেকে বেশী ফলনের আশায় রোরো আবাদ করে সে কারণে দেশীয় প্রজাতির ধানের আবাদ কমে যাচ্ছে। তবে তিনি জানান, আমি বিঘাপ্রতি সাড়ে ৭ মণ থেকে সাড়ে ৮ মণ হারে আমন ধান পেয়েছি।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রওশন আলম জানান, এ বছর উপজেলায় বোনা আমন ধানের মোট ১০ হাজার ২’শ হেক্টর জমিতে আমন ধানের ল্যমাত্রা ধরা হলেও আবাদ হয়ে ১১ হাজার ২’শ হেক্টর জমিতে এবং রোপা আমন ধানের ল্যমাত্রা ৩ হাজার ৯’শ হেক্টর ধরা হলেও আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৬’শ হেক্টর জমিতে। এবছর আমাদের উৎপাদন ল্যমাত্র ছাড়িয়েছে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, বর্তমানে যে হারে ফলন পাওয়া যাচ্ছে তাতে বোনা আমন ধানে ১৩ হাজার ৪’শ ৪০ মেট্রিন টন এবং রোপা আমন ধানে ১৪ হাজার ৭’শ ২০ মেট্রিন টন চাউল পাওয়া সম্ভব হবে। এদিকে নতুন ধানের গন্ধে মৌ মৌ করছে গ্রামাঞ্চলের কৃষকদের বাড়ীর আঙ্গিনা। নতুন ধান ওঠার পরেই শুরু হয়েছে নবান্ন উৎসব। নতুন ধানের পীঠা-পুলি, ভাত রান্না করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উৎসবে মেতে উঠবে সবাই। এই উৎসবে যোগ দেবেন মেয়ে-জামাই। মেয়েকে আনা হবে নাইয়রে সেই সাথে আনা হবে জামাইকে।